বই পড়ার আগ্রহ হলো যেন এক সুদীর্ঘ নদীর যাত্রা। এই নদীতে কত যে বাঁক, কত যে খাঁড়ি, কত যে মোহনা, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। তেমনি বইয়ের জগৎও বিশাল, বৈচিত্র্যময়, অনন্ত। কোন পথে যাবেন, কোন তীরে ভিড়বেন, কোন জলে স্নান করবেন, তা আপনার নিজের ইচ্ছা আর রুচির উপর নির্ভর করে।
কেউ হয়তো উপন্যাসের রোমাঞ্চে মজে থাকতে চান, কেউ আবার কবিতার ছন্দে মুগ্ধ হতে চান। কারো কাছে হয়তো ইতিহাসের গল্প মন কাড়ে, কারো কাছে আবার বিজ্ঞানের জটিল তত্ত্ব। কেউ হয়তো দর্শনের গভীরে হারিয়ে যেতে চান, কেউ আবার মনোবিজ্ঞানের অতল গহ্বরে।
আমি বলব, বই পড়ার কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। যা ভালো লাগে, যা মনকে স্পর্শ করে, তাই-ই পড়ুন। শুধু একটা কথা মনে রাখবেন, বই পড়া মানে শুধু বিনোদন নয়, বই পড়া মানে নিজেকে জানার একটা উপায়। বই পড়ে আমরা নিজের অজানাকে জানতে পারি, নিজের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারি।
তবে হ্যাঁ, কিছু বই আছে, যেগুলো পড়া সবার জন্যই জরুরি। যেমন ধরুন, আপনার নিজের দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, সাহিত্য সম্পর্কে কিছু বই পড়া উচিত। এতে আপনি নিজের শিকড়কে চিনতে পারবেন, নিজের দেশকে ভালোবাসতে শিখবেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, সাহিত্য সম্পর্কেও কিছুটা জানা দরকার। এতে আপনি বুঝতে পারবেন, পৃথিবীটা কত বড়, কত বৈচিত্র্যময়।
বিজ্ঞান, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কেও কিছু বই পড়া উচিত। এতে আপনার চিন্তার জগৎ প্রসারিত হবে, আপনি জীবনকে নতুন দৃष्टिতে দেখতে শিখবেন।
তাই, বই পড়ুন। যা ইচ্ছা, তাই পড়ুন। কিন্তু ভালো বই পড়ুন, মানসম্মত বই পড়ুন। বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করুন, অন্যকে সমৃদ্ধ করুন।