বাংলাদেশের বাম রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য স্তম্ভ, একজন অক্লান্ত সংগ্রামী, শ্রমিক ও কৃষকের বন্ধু, কমরেড হায়দার আকবর খান রনো আর নেই। ১১ মে ভোর রাতে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইনি ছিলেন ৮২ বছর বয়সী।
রনো ছিলেন একজন প্রকৃত মার্কসবাদী। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় উৎসর্গ করেছিলেন শ্রমিক ও কৃষকের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) একজন কেন্দ্রীয় নেতা এবং দীর্ঘদিন ধরে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রনোর জন্ম ১৯৪২ সালে কলকাতায়। ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৮ সালে তিনি আয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং গ্রেপ্তার হন। মুক্তির পর তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং একজন সংগঠক ও নেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর রনো শ্রমিক ও কৃষকের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বারবার গ্রেপ্তার ও নির্যাতিত হন। তবুও তিনি কখনোই হাল ছেড়েননি।
রনো ছিলেন একজন লেখকও। তিনি বেশ কিছু বই লিখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে “মার্কসবাদের প্রথম পাঠ“, “মার্কসীয় অর্থনীতি”, এবং “মার্কসবাদ ও সশস্ত্র সংগ্রাম”।
রনোর মৃত্যু বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে একটি বড় শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তিনি ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ নেতা, যিনি সর্বদা শ্রমিক ও কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
কমরেড রনো চলে গেলেও তার আদর্শ চিরন্তন হয়ে থাকবে। শ্রমিক ও কৃষকের অধিকার আদায়ের লড়াই তার পথ অনুসরণ করেই এগিয়ে যাবে।