বিশ্ব পরিবেশ দিবস (৫ই জুন) – সবুজ আইটি: শ্রম সংগঠনগুলিতে টেকসই ডিজিটাল রূপান্তর

Estimated read time 1 min read

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। প্রকৃতির বুকে আমাদের এই অস্তিত্বের সুরক্ষা, সুস্থতা, তার জন্য আমাদের কর্তব্যের কথা এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। দিনটিতে আজ আলোচনা করতে চাই “সবুজ আইটি” তথা টেকসই ডিজিটাল রূপান্তর নিয়ে, আমাদের ভাবতে হবে, শ্রম সংগঠনগুলি কীভাবে এই সবুজ আইটির আওতায় এসে নিজেদের রূপান্তর ঘটাতে পারে, তাদের কাজের পরিবেশকে আরো টেকসই করে তুলতে পারে।

শ্রমিকের ঘামে গড়া সংগঠন, পরিবেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক: শ্রমিকের শ্রমে যে কারখানা, যে ক্ষেতখামার গড়ে ওঠে, তা প্রকৃতিরই অংশ। সেই শ্রমিকের অধিকার রক্ষার যে সংগঠন, তার পরিবেশ সচেতনতাও অত্যন্ত জরুরী। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হলে শ্রমিকের জীবনযাত্রাও বিপন্ন হয়। কৃষকের ফসল নষ্ট হয়, জেলে মাছ পায় না, শিল্প-কারখানার শ্রমিকের কর্মক্ষেত্র বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সুতরাং পরিবেশ রক্ষা, শ্রমিকের অধিকার রক্ষারই অংশ।

সবুজ আইটি: ডিজিটাল রূপান্তরের নতুন মাত্রা: ডিজিটাল রূপান্তরের যুগে শ্রম সংগঠনগুলোর কার্যক্রমও আজ অনলাইনে ছড়িয়ে আছে। তবে এই ডিজিটাল রূপান্তর যেন পরিবেশের ক্ষতিসাধন না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরী। এই প্রেক্ষাপটেই সামনে আসে “সবুজ আইটি” বা টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের ধারণা। এর মানে হলো, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশের ক্ষতি কমানো, এমনকি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখা।

শ্রম সংগঠনে সবুজ আইটির প্রয়োগ: শ্রম সংগঠনগুলো যেভাবে সবুজ আইটির আলোকে নিজেদের রূপান্তর করতে পারে, তার কিছু দিক নিচে তুলে ধরা হলো:

  • বিদ‍্যুৎ সাশ্রয়ী ডিভাইস ও সফটওয়্যার: শ্রম সংগঠনের অফিসে বিদ‍্যুৎ সাশ্রয়ী কম্পিউটার, প্রিন্টার, এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। এমন সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে যা কম বিদ‍্যুৎ খরচ করে।
  • পেপারলেস অফিস: যতটা সম্ভব কাগজের ব্যবহার কমিয়ে অনলাইন ডকুমেন্ট, ই-মেইল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে কাগজ উৎপাদনে যে পরিবেশগত ক্ষতি হয়, তা কমানো সম্ভব।
  • রিসাইকেল ও রিইউজ: পুরনো কম্পিউটার, প্রিন্টার, অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি রিসাইকেল করা বা দরিদ্র শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করা যেতে পারে।
  • সচেতনতা বৃদ্ধি: শ্রমিকদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা যেতে পারে। তাদেরকে সবুজ আইটির গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করা যেতে পারে।

প্রযুক্তির সহায়তায় পরিবেশ রক্ষা: প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে শ্রম সংগঠনগুলো নানাভাবে ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন:

  • দূষণ মনিটরিং: বিভিন্ন অ্যাপ বা সেন্সরের মাধ্যমে শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত দূষণের মাত্রা মনিটর করা যেতে পারে। এই তথ্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
  • বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: প্রযুক্তির সাহায্যে বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, রিসাইকেলের কাজ আরও দক্ষ ও সুসংগঠিত করা যেতে পারে।
  • পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন: কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে তার পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নে প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পরিবেশের ক্ষতি কমানো সম্ভব।

উপসংহার: আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমাদের সকলের প্রতিজ্ঞা হোক, আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় যথাসাধ্য ভূমিকা রাখব। শ্রম সংগঠনগুলো সবুজ আইটির আলোকে নিজেদের রূপান্তর ঘটিয়ে এই লক্ষ্যে এগিয়ে আসবে, এই প্রত্যাশা রইল। স্মরণ রাখতে হবে, আমাদের এই পৃথিবী, আমাদের এই পরিবেশ আমাদের সবার। এর সুরক্ষা, সুস্থতা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

You May Also Like