“মানুষ অভ্যাসের দাস”— এই প্রবচন বহু পুরোনো। অভ্যাস, এই ছোট্ট শব্দটিতে লুকিয়ে আছে মানুষের চরিত্রের এক গভীর রহস্য। আমরা যা কিছু করি, তার প্রায় সবকিছুই কোনো না কোনো অভ্যাসের ফল। সকালে ঘুম থেকে ওঠা, দাঁত ব্রাশ করা, খাওয়া-দাওয়া, কাজকর্ম, এমনকি আমাদের চিন্তাভাবনাও অভ্যাসের বেড়াজালে আবদ্ধ।
তাহলে কি মানুষ সত্যিই অভ্যাসের দাস? কি এই অভ্যাসের জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়?
অভ্যাসের শিকল কতটা শক্ত, তা নির্ভর করে অভ্যাসের প্রকৃতির উপর। কিছু অভ্যাস আছে, যেগুলো আমাদের জীবনকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করে তোলে। যেমন, নিয়মিত বই পড়া, সকালে হাঁটা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া— এগুলো ভালো অভ্যাস। অন্যদিকে, ধূমপান, মদ্যপান, আলস্য, রাগ— এগুলো খারাপ অভ্যাস।
ভালো অভ্যাস আমাদের জীবনকে সার্থক করে তোলে। আর খারাপ অভ্যাস আমাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। তাই প্রশ্ন হলো, আমরা কি শুধু খারাপ অভ্যাসের দাস, নাকি ভালো অভ্যাসেরও দাস হতে পারি?
উত্তর হলো, দুটোই সম্ভব। আমরা চাইলে খারাপ অভ্যাসগুলোকে ত্যাগ করে ভালো অভ্যাসগুলোকে গড়ে তুলতে পারি। এজন্য প্রয়োজন দৃঢ় সংকল্প, অধ্যবসায়, এবং সঠিক পরিবেশ।
অভ্যাস পরিবর্তন করা সহজ কাজ নয়। কিন্তু অসম্ভবও নয়। একটু একটু করে, ধীরে ধীরে, আমরা নিজেদের অভ্যাসগুলোকে বদলে দিতে পারি। আর যখন আমরা নিজেদের অভ্যাসের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবো, তখনই আমরা সত্যিকার অর্থে মুক্ত হতে পারবো।
তাই, বলি, মানুষ অভ্যাসের দাস, তা ঠিক। কিন্তু এই দাসত্ব চিরস্থায়ী নয়। আমরা চাইলেই এই দাসত্বের শৃঙ্খল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারি।